1. [email protected] : মো: সরোয়ার সরদার : মো: সরোয়ার সরদার
  2. [email protected] : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক
  3. [email protected] : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি
  4. [email protected] : Sadak Mostafa : Sadak Mostafa
  5. [email protected] : বিশেষ প্রতিনিধি : বিশেষ প্রতিনিধি
ফিলিস্তিন মুক্তির মুখপাত্র আবু ওবাইদা | ঢাকা আওয়ার
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ন

ফিলিস্তিন মুক্তির মুখপাত্র আবু ওবাইদা

মো. সারোয়ার সরদার
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ২২৯ সময় দর্শন
আল কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা। পুরো মুসলিম বিশ্বে এখন আবু ওবাইদা সবচেয়ে জনপ্রিয় নামের একটি। আরব বিশ্বের শিশু থেকে বৃদ্ধরা পর্যন্ত তার বক্তব্য শুনতে অপেক্ষায় থাকেন। তুরস্ক, ইরান, ইয়েমেন, ইরাক, লিবিয়া, র্জডানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হামাসকে সমর্থন করে বিক্ষোভ হয়েছে, যেখানে আবু ওবাইদার নামে স্লোগান দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবু ওবাইদার ছবি, ব্যানার, পোস্টার, গ্রাফিতি আঁকতে দেখা গেছে। অনলাইনে আবু ওবাইদাকে নিয়ে লেখালেখি, হ্যাশট্যাগ, ক্যাম্পিয়িন, কার্টুন করতেও দেখা গেছে।

আবু ওবাইদা
আবু ওবাইদার প্রকৃত নাম কি তা জানা যায়নি। ধারণা করা হয় নবী মুহাম্মাদ সা. এর সহচর আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহর নাম অনুসারে আবু ওবাইদা ছদ্মনামটি গ্রহণ করেছেন। তিনি সপ্তম শতাব্দীতে সংঘটিত ইয়ারমুকের যুদ্ধ ও জেরুজালেম অবরোধকালে মুসলিম-বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন।

ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তেনের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে আবু ওবাইদা ক্যামেরার সামনে আসেন। ভিডিও বার্তায় তাকে মুখ ও মাথায় একটি লাল রঙের কেফিয়াহ পরা দেখা যায়। ভিডিওতে শুধু ওবাইদার চোখ দেখতে পাওয়া যায় ও কণ্ঠ শুনতে পাওয়া যায়। তার গায়ে থাকে সাদামাটা একটি সামরিক পোশাক, মাথায় সামরিক কাপড়ের হেডব্যান্ড। হেডব্যান্ডে আরবিতে দুইটি বাক্য লেখা থাকে। উপরের বাক্য হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ এবং নিচের দ্বিতীয় লাইনটি হচ্ছে ‘আল-কাসসাম ব্রিগেড’। হেডব্যান্ডের মাঝখানে আল-কাসসাম ব্রিগেডের লোগো থাকে। তার হাতের বাহুতে দেখা যায় ফিলিস্তিনের পতাকা। তার বুকে নেমপ্লেটে আরবিতে লেখা থাকে সামরিক মুখপাত্র। তিনি এই সাধারণ বেশভূষায় যখন ভাষণ দেন তখন সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ মনোমুগ্ধ হয়ে শোনেন।

ক্যামেরার সামনে কথা বলছেন আবু ওবাইদা

যেভাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন
আনুমানিক ৪২ বছর বয়সি আবু ওবাইদা প্রথম ক্যামেরার সামনে আসেন ২০০৬ সালে। যদিও কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সাল থেকে আবু ওবাইদাকে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন ভিডিও ও ছবিতে দেখা যাচ্ছিল।
২০০৫ সালে ইসরায়েল যখন তাদের সেনাবাহিনী গাজা এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়, তখন হামাস তাদের সামরিক বাহিনী কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র হিসেবে আবু উবাইদাকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ করে।

২০০৬ সালের জুন মাসের ৯ তারিখে আবু গালিয়া নামের একটি ফিলিস্তিনি সাধারণ পরিবার সমুদ্র তীরে ঘুরতে যান। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনী গানশেট থেকে গুলি করে ওই পরিবারের আবু গালিয়া ও তার স্ত্রীকে হত্যা করেন। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা গণমাধ্যমের আলোচ্যবিষয় হয়। ভিডিওতে দেখা যায় পরিবারটির সঙ্গে থাকা মেয়ে হুদা চিৎকার করছে। সে একবার তার বাবার লাশের দিকে আরেকবার তার মায়ের লাশের দিকে ছুটে যায়। ওই ঘটনা সারা বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে দাগ কাটে।

ওই ঘটনার পর হামাস জুনের ২৫ তারিখ একটি অপরেশন শুরু করে। গাজার দক্ষিণে রাফা বর্ডারের কাছাকাছি জায়গায় অপরেশন চালিয়ে দুই ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা ও গিলাদ শালিত নামের এক সেনাকে বন্দি করে। এই অপরেশন বিষয়ে জানাতেই প্রথমবারের মতো আবু ওবাইদা ক্যামেরার সামনে আসেন। তখন থেকেই তিনি সমগ্র আরব বিশ্বে পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন।
গত ১৭ বছরে হামাস যতগুলো অপরেশন চালিয়েছে তার ঘোষণা দিতে ক্যামেরার সামনে এসেছেন আবু ওবাইদা। ধীরে ধীরে তিনি আরব বিশ্বে ও পুরো মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যখন ইসরায়েলে হামলা করে।

তুরস্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আবু ওবাইদার ব্যানার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়

ইসরায়েলি প্রপাগান্ডা
আবু ওবাইদাকে চিহিৃত করতে এবং হত্যা করতে ইসরায়েল প্রথম থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা ২০১৪ সালে ইসরায়েলি মিডিয়ায় হুজাইফা সামির আবদুল্লাহ আল-কাহলুত নামের একজনের ছবি প্রকাশ করে দাবি করে এটিই আবু ওবাইদা। তবে ছবি ও নাম বৈধ হওয়ার বিষয়টি আল-কাসসাম ব্রিগেড অস্বীকার করে। এছাড়া আবু ওবাইদাকে খুঁজে বের করতে ইসরাইলি গোয়েন্দা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে। একবার দীর্ঘদিন আবু ওবাইদাহ কোনো বক্তব্য দিতে ভিডিওতে না আসায় ইসরায়েল প্রচার চালায় তাদের বোমার আঘাতে তিনি মারা গিয়ে থাকতে পারেন। পরে ওবাইদা ক্যামেরার সামনে এসে কথা বললে তাদের দাবি মিথ্যা হয়ে যায়।

আবু ওবাইদার বক্তব্যের কিছু বৈশিষ্ট্য
আবু ওবাইদা বক্তব্যের শুরুতে সারা বিশ্বের স্বাধীন মানুষদেরকে সম্বন্ধন করেন। অর্থাত বিশ্বের স্বাধীন মানুষদের উদ্দেশে তিনি কথা বলেন। শুধু আরব, মুসলিম বা কোনো জাতির উদ্দেশে না। তার বক্তব্য হয় সংক্ষিপ্ত এবং বস্তুনিষ্ঠ। তার বক্তব্যে যে বাক্যগুলো বলা হয় তার শব্দগুলো খুবই আকর্শনীয় হয় এবং মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। তিনি বক্তব্যে প্রপাগাণ্ডার আশ্রয় নেন না। বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল পাওয়া যায়। তিনি বক্তব্য শেষ করেন ফিলিস্তিনের একজন বিপ্লবী নেতা ইজ্জউদ্দিন আবদুল কাদির ইবনে মুস্তাফা ইবনে ইউসুফ ইবনে মুহাম্মদ আল-কাসসামের বিখ্যাত একটি বাক্য দিয়ে। যার নাম অনুসারেই কাসসাম ব্রিগেডের নামকরণ করা হয়। তার বিখ্যাত উক্তি ‘এটা হচ্ছে জিহাদ; হয় বিজয়, না হয় সাহাদাত।’

সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *