1. [email protected] : মো: সরোয়ার সরদার : মো: সরোয়ার সরদার
  2. [email protected] : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক
  3. [email protected] : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি
  4. [email protected] : Sadak Mostafa : Sadak Mostafa
  5. [email protected] : বিশেষ প্রতিনিধি : বিশেষ প্রতিনিধি
তিনাপ সাইতার: ভয়ংকর সুন্দর এক ঝর্ণার গল্প | ঢাকা আওয়ার
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন

তিনাপ সাইতার: ভয়ংকর সুন্দর এক ঝর্ণার গল্প

সিয়াম আহম্মেদ রাকিব
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩
  • ৬৬৭ সময় দর্শন
সাঙ্গু নদী ধরে নৌকায় রুমা বাজার বাইপাস করার মুহূর্ত

বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে চোখ জুড়ায় সবার। অসংখ্য পাহাড়, ঝর্ণা, বন, পশু-পাখির সঙ্গে সাক্ষাৎ মেলে বান্দরবানে। জানা-অজানা বহু জলপ্রপাত ঘেরা বান্দরবান। দেশের সব থেকে বড় ও ভয়ংকর এক জলপ্রপাত অভিযানের গল্প শোনাব আপনাদের …

পাইন্দু খালের গহীনে লুকিয়ে থাকা অপার এক বুনো সৌন্দর্যের নাম তিনাপ সাইতার। এটি বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। পানি প্রবাহের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত। স্থানীয়দের কাছে এটি পাইন্দু সাইতার নামেও পরিচিত।

তখন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস। আমাদের গ্রুপের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে একটা স্পেশাল ট্রিপের আয়োজন করবো ভাবছি, কোথায় আয়োজন করা যায় গ্রুপে এমন পোস্ট করলে প্রচুর নক আসে। অনেকেই বলেন, দাদা তিনাপ সাইতারে ইভেন্ট করুন…
তো যেই ভাবা সেই কাজ, ঠিক করলাম তিনাপ সাইতারেই যাবো। যেহুতু এর আগে তিনপা সাইতার যাওয়া হয়নি তাই ওই রুটের টুকটাক ম্যাপিং করতে শুরু করলাম। কয়েকজন বড় ভাইয়ের সহায়তায় এবং নিজের চেষ্টায় ম্যাপিং এবং স্থানীয় গাইডের সঙ্গে কথা বলে সবকিছু ঠিকঠাক করি। ম্যাপিং করতে গিয়ে যেটা মনে হলো, তিনাপ সাইতারের রাস্তাটা রুমা বাজার হয়ে যাওয়াটাই তুলনামূলক সহজ হবে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নেই রুমা বাজার হয়েই যাবো। আমরা সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ ঢাকা থেকে রওনা হই বান্দরবানের উদ্দেশে। সকালে বান্দরবান শহরে নেমে নাস্তা করে রিজার্ভ করা চাঁদের গাড়িতে রওনা হই রুমা বাজারের উদ্দেশে।

মাঝপথে হঠাৎ লাইনম্যানের কল দিয়ে বললেন, দাদা রুমা ক্যাম্প থেকে তিনাপ যাওয়ার অনুমতি দেবে না। তারপর আমরা প্লান পরিবর্তন করলাম। রুমা বাজারের আগে খক্ষ্যং ঝিরি বাজারে নেমে আমরা নৌকা নিয়ে রুমা বাজার বাইপাস করে একটু সামনে গিয়ে সাহেব বাড়ি নামক ঘাটে নেমে যাই। একটু পরেই আমাদের আগে থেকে যোগাযোগ করে রাখা জিপ চলে আসে এবং আমরা রওনা হই আড়তা পাড়ার উদ্দেশে। তিনাপ সাইতার যাওয়ার বেইসক্যাম্প হিসেবে পরিচিত এই আড়তা পাড়া। ৫ মিনিট গাড়ি চলতে না চলতেই শুরু হলো মুষল ধারে বৃষ্টি, আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম ভিজেই যাবো, পাহাড়ে বৃষ্টি আহা! সে এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি। খোলা জিপে ভিজতে ভিজতে সবাই গান ধরলাম-
চলে আমার চান্দের গাড়ি…
যাইমু সোনা বন্ধুর বাড়ি
….

নির্মাণাধীন রাস্তা বৃষ্টিতে একদম যা তা অবাস্থা হয়ে গেল মুহুর্তেই, ভাঙা রাস্তায় গাড়ির চাকা আটকে যাচ্ছিল বার বার। একটা পর্যায়ে গিয়ে এমনভাবে আটকে গেলো যে, আমরা সবাই খুব দ্রুত লাফিয়ে নামলাম। তা না হলে একদম উল্টে যেতো গাড়ি। অনেকক্ষণ ধাক্কাধাক্কি করেও আমরা আর গাড়ি সামনে আগাতে পারলাম না, যার কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম এই নির্মাণাধীন ভাঙা রাস্তাটুকু পার হয়ে সামনে গিয়ে বাইকে যাব। পাড়ার লাইনম্যানের সঙ্গে কথা বলে বাইক পাঠাতে বললাম, আমরা ঝুম বৃষ্টির মধ্যে সবাই গান গাইতে গাইতে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে হাঁটতে থাকলাম। প্রায় ৪০ মিনিট পর আমরা নির্মাণাধীন কাচা রাস্তা শেষ করে পিচঢালা রাস্তায় এসে পৌঁছালাম আমরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাইক নিয়ে চলে আসলো পাহাড়ি দাদারা। সবাইকে বাইকে উঠিয়ে আমিও উঠে পরলাম। এবার গন্তব্য আড়তা পাড়া …

পাহাড়ি উঁচুনিচু রাস্তা ধরে যেতে থাকলাম আমরা, প্রায় ৩৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম আমাদের বেইসক্যম্প আড়তা পাড়ার প্রবেশমুখে। তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়েছে। জনসন দাদা আমাদের স্বাগত জানালো। আমরা দাদার দোকানে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম, চা বিস্কুট খেলাম, পরে সিদ্ধান্ত হলো জনসন দাদার ঘরেই আমারা থাকছি।

পশ্চিম আকাশে সূর্য তখন হেলে পরেছে, অতঃপর আমরা পাড়ার ঘরের উদ্দেশে হাঁটা শুরু করলাম, আড়তা পাড়ায় প্রবেশের পথটা অনেক সুন্দর। রাস্তা থেকে সোজা নিচে নামলেই পাড়া। অবশেষে আমরা আড়তা পাড়ায় পা রাখলাম। ক্লান্তি নিয়ে সন্ধ্যার সময় পাড়ার রাস্তা যখন পাড়ি দিচ্ছিলাম, বিচিত্র এক অনুভূতি কাজ করছিল নিজের মাঝে।

পাড়ার মানুষগুলো আমাদের প্রতিটি গতিবিধি খেয়াল করছিল। ভাবতে অবাক লাগে এতো দুর্গম একটি জায়গায় প্রায় ৬০টি পরিবারের বসবাস, বিভিন্ন দিক দিয়ে হিসাব করলে প্রায় ৭০০ মানুষের বসবাস এই পাড়ায়, বান্দরবান বড়ই বৈচিত্র্যময়।

রাতে আমাদের খাবারের আয়োজন হাসের মাংস, আলুভর্তা, ডাল এবং জুমের চালের ভাত, রান্না করলাম আমি আর আমার উস্তাদ হিমু সাহেব… খাবার জায়গাটি দেখে ক্লান্তি কিছুটা সুখকর অনুভূতিতে রূপান্তরিত হলো। পাশেই সুউচ্চ টেবিল, পাহাড়ে খোলা আকাশের নিচে বাশেঁর মাচা, সেখানে বসে খাবো। যাইহোক, খাওয়া শুরু করলাম, মনে হচ্ছিল অমৃত খাচ্ছি। আসলে সারাদিন পর কী খাচ্ছিলাম, সেটি আর মূখ্য বিষয় ছিল না, খেতে পেয়েছি সেটিই মুখ্য বিষয়।

আমরা যেদিন আড়তা পাড়ায় পৌঁছলাম, সম্ভবত তার দুদিন পর ছিল পূর্ণিমা। আকাশে অল্পবিস্তর সাদা মেঘ আর তার মাঝে ডিমলাইটের মতো গোলাকার একটি বস্তু। এই সৌন্দর্যের বর্ণনা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। কিছু জিনিস আছে কেবল অনুভব করা যায়, আমি এই মুহূর্তগুলো বরাবরের মতোই ক্যামেরায় ছবি না তুলে কেবল অনুভব করেছি। আমার কাছে মনে হচ্ছিল এই সৌন্দর্য অনুভব না করে ছবি তুলে সময় নষ্ট করলে পাপ হবে, পাপ। মাঝেমধ্যে এমনও মনে হচ্ছিল যেন আমি আমাজনের কোনো দুর্গম অঞ্চলে আছি। খোলা আকাশের নিচে সেই বাশেঁর মাচায় জীবন জোয়ার আসর চলল সেই রাত ৩ টা অবধি। আমি, হিমু দা, শুভ দা, রাএি আপু, আকবর ভাই, ফয়সাল ভাই, হাচান ভাই, পারভেজ স্যার ও মিজান ভাই, আহ..! রাতভর সে কি গান আর গল্প।


দ্বিতীয় দিন সকালে ঘুম ভাঙলো বৃষ্টির ঝনঝনানিতে…

ঘুম থেকে উঠে চুলায় খিচুড়ি বসিয়ে দিলাম। বৃষ্টি হচ্ছেতো হচ্ছেই থামার কোনো নাম নেই। চিন্তায় পড়ে গেলাম এই বৃষ্টির মধ্যে কিভাবে এত পথ পাড়ি দিয়ে তিনাপ সাইতার যাব। অবশেষে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলাম দুপুরের আগে বৃষ্টি না থামলে আজকে পাড়াতেই বিশ্রাম করব, পাড়ার আশপাশ ঘুরে দেখব, কিন্তু চিন্তা হচ্ছিল কালকের মধ্যে ঢাকায় ফিরে পরশু আবার অফিসে বসতে হবে..

বেলা ১২টা অবধি বৃষ্টি থামলো, তাই সময় নষ্ট না করে গাইডকে সঙ্গে নিয়ে হুটহাট বেরিয়ে পরি তিনাপ সাইতারের উদ্দেশে। অর্ধেক পথ পাহাড়ি আর অর্ধেক ভয়ংকর পাইন্দু খাল, বৃষ্টি স্নাত পাইন্দু খাল ভালোই পরীক্ষা নিচ্ছিল, সবাই মিলে মিশে হাত ধরে, কখনও বাঁশ ধরে ঝিরি পার হতে লাগলাম, ঝিরির পানি বরফের মতো ঠান্ডা, ঝিরি পারি দেওয়ার সময় মাঝেমধ্যে কোমর পর্যন্ত পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময়ের অনুভূতি সুখ আর দুঃখের এক মিশ্রণ, প্রকৃতি যেন আমাদের সঙ্গে মজা নিচ্ছিল, এই প্রচন্ড রোদ আবার এই মেঘলা আকাশ, এ বড়ই আজব এক অনুভূতি, ঘামে টিশার্ট ভিজে একাকার আবার হঠাৎ ঠান্ডা বাতাসে শরীর জুড়াচ্ছে।

পথে একটা ছোট্ট ঝিরি

বান্দরবান জায়গাটা বড়ই সুন্দর। পথের বাঁকে বাঁকে সে নানা প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য নিয়ে বসে আছে মনোমুগ্ধ করার জন্য। যতবার আমরা কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, ঠিক ততবারই প্রকৃতি আমাদের তার রূপের মায়ায় নতুন করে মুগ্ধ করেছে আর ভুলতে বাধ্য করেছে আমাদের কষ্ট। হয়তো ঘামে আপনি গোসল করে ফেলেছেন, দেখবেন কোথা থেকে যেন ঠান্ডা বাতাস এসে শরীর জুড়িয়ে দিয়ে যাবে। যাহোক, পথে আরও কয়েকটি বিরতি দিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা হাঁটার পর তিনাপ সাইতারের দেখা মিলল। এতো সুন্দর আর বিশাল দানবীয় আকৃতির ঝর্ণা আমার এই ছোট্ট জীবনে আর দেখা হয়নি, প্রকৃতি যে আসলেই কত সুন্দর, বিচিত্র, কত ভয়ংকর এবং সৃষ্টিকর্তা যে তাকে কতটা ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে তার একটু সুন্দর নমুনা চোখের সামনে উপলব্ধি করলাম। বিশাল বিশাল পাথরের মাঝ দিয়ে প্রবহমান স্রোতের খোরাক জুগিয়ে চলেছে এই তিনাপ সাইতার।

তিনাপ সাইতারকে পেছনে রেখে আমি

স্কুল জীবনের শেষ দিক থেকে আমার ভ্রমণজীবনের শুরু সে প্রায় ছয় বছর হলো কিন্তু প্রকৃতির এতো নৈকট্য আগে কখনও অনুভব করিনি।

প্রকৃতির এই বিশালতায় এতটাই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম যে, সবাই ছবি তোলায় ব্যস্ত থাকলেও আমি আপন মনে বসে প্রকৃতির খেলা দেখছিলাম, আর ভাবতেছিলাম ফেরার সময় কিছু ছবি তোলা যাবে। কিন্তু এবারের ভ্রমণে সৃষ্টিকর্তা হয়ত পণ করেছিলেন আমাদের সব ধরনের অভিজ্ঞতা করাবেন, মুহূর্তেই আকাশ অন্ধকার মেঘে ঢেকে গেলে। স্মৃতির জন্য ঝটপট কয়েকটি ছবি তুলে দ্রুত তিনাপকে বিদায় জানিয়ে ফিরতি পথ ধরলাম। কিছুটা পথ পারি দিতেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হলো, পাহাড়ি ঝিরি ধরে এগুতে এগুতে বুঝতে পারলাম, যে ঝিরির পানি আসার সময় কোমর পর্যন্ত পেয়েছি তা প্রায় হাত খানেক বেড়ে বুক পর্যন্ত হয়েছে। ঝিরিতে পানির স্রোত প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আমাদের গাইড সহ আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম সামনের ঝিরি পারি দেওয়া সম্ভব নাহ, পাহাড় পার হয়ে যাব। কিন্তু এই পাহাড়ে পথ কোথায়? এ তো শুধু জঙ্গল আর জঙ্গল, সীদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আবারও ঝিরি পার হওয়ার সীদ্ধান্ত হলো। হিমু ভাই, শুভ ভাই সঙ্গে আমাদের গাইড এবং আমি মিলে অতিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে শক্ত বাঁশের সাহার্য্যে ঝিরি পার হলাম। এই বিভীষিকাময় ঝিরি পার হয়ে পাহাড়ি পথ ধরে আড়তা পাড়ার দিকে যাএা শুরু করলাম। শুরু হলো জোকের আক্রমণ, সামনে পেছনে প্রায় সবাইকেই জোঁকে ধরল, আমাকেও ধরল, আমার জোঁক ভীতি প্রবল ছিল, যেখানে জীবন বাঁচানোর প্রশ্ন, সেখানে জোঁকের ভয় অনেকটা তুচ্ছ। এতকিছু যখন একসঙ্গে ঘটছিল আশপাশে কি হচ্ছে তখন ভুলেই গিয়েছিলাম, মোটামুটি খাড়া একটা পাহাড় উঠে গিয়ে যখন দাঁড়ালাম, প্রকৃতি আবারও তার সৌন্দর্যে আমার সব ক্লান্তি দূর করে দিল। আমাদের পাশের আর দূরের পাহাড়ে সব জায়গায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে, আহা কি সুন্দর দৃশ্য….

ঘণ্টা খানেক হাঁটার পর অবশেষে পাড়ায় এসে পৌঁছালাম। জনসন দাদার দোকানে বসে সবাই পেঁপে, আনারস, মালটা খেতে খেতে সন্ধ্যা নামল, আমরা ঘরে ফিরে এলাম… রাতে খেয়ে আড্ডা শেষ করে সে রাতে ঘুমিয়ে পরলাম সবাই।

সকালে উঠে পাড়ার আশাপাশে ঘুরে নাস্তা করে কারবারি দাদার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলে আমরা বিদায় নিলাম আড়তা পাড়া থেকে। বাইকে চলে এলাম রুমা বাজার, সেখান থেকে সিএনজি করে বান্দরবান শহরে। বান্দরবান শহরে রাতের খাবার শেষ করে এবার নীড়ে ফেরার পালা….

ঢাকা থেকে সাইতার তিনাপ যাওয়ার সম্ভব্য রুটপ্লান

ঢাকা থেকে বিভিন্নভাবে বান্দরবন আসা যায়। ঢাকার কলাবাগান, যাত্রাবাড়ী ছাড়াও কয়েকটি জায়গা থেকে বান্দরবানের বাস ছাড়ে। ঢাকা থেকে এস. আলম, সৌদিয়া, ইউনিক, হানিফ, শ্যামলি, সেন্টমার্টিন পরিবহন, ডলফিন ইত্যাদি পরিবহনের বাস বান্দরবনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

এসি ও ননএসি জনপ্রতি বাসের ভাড়া ৭৫০ থেকে ১৫০০ টাকা। অথবা ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম এসে তারপর চট্রগ্রামের বিআরটিসি টার্মিনাল বা দামপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে ১০০-৩০০ টাকা বাস ভাড়ায় বান্দরবন আসা যায়। চট্রগ্রাম থেকে প্রাইভেট কারে ২৫০০-৩৫০০ টাকায় বান্দরবন আসা যায়।

ঢাকা থেকে চট্রগ্রামগামী সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশিতা, মহানগর প্রভাতি কিংবা মহানগর গোধূলি ট্রেনে করে চট্রগ্রাম আসা যায়। শ্রেণি ভেদে ট্রেন ভাড়া ৩৫০ থেকে ১৫০০ টাকা। চটগ্রাম এসে উপরের নিয়মে বান্দরবান যেতে হবে।

বান্দরবান থেকে তিনাপ সাইতার

বান্দরবান থেকে দুটি পথ ধরে তিনাপ সাইতারে যেতে পারেন। রোয়াংছড়ি থেকে এবং রুমা থেকে। বান্দরবন বাস স্ট্যান্ড থেকে রোয়াংছড়ি বাসে যাওয়া যায়। বাসে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে।

রোয়াংছড়ি নেমে পুলিশ স্টেশনে নাম নিবন্ধন করে গাইড ভাড়া করতে হয়। কেপলং পাড়া, পাইখং পাড়া, রনিনপাড়া, দেবাছড়া পাড়া হয়ে তিনাপ সাইতারে পৌঁছানো যায়।

দ্বিতীয় রুটে যেতে হলে বান্দরবন থেকে বাসে করে রুমা যেতে হবে। রুমা সদর থেকে চাঁদের গাড়ি করে দুটি পথে সহজে যাওয়া যায়। চাঁদের গাড়ি করে ৪৫মিনিট থেকে ঘণ্টাখানেক সময় প্রয়োজন হয়।

এরপর আরতা পাড়ায় নেমেই হাঁটতে হবে প্রায় ৩ ঘণ্টার মতো। পাহাড়ি রাস্তায় সবসময় গাড়ি পাওয়া যায়না। এর জন্য আগেভাগেই ঠিক করে রাখতে হবে চাঁদের গাড়ি।

সতর্কতা

>> প্রায়ই নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশ আর্মি কর্তৃক তিনাপ সাইতারে দর্শনার্থীদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ থাকে। যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই খবর নিয়ে যাবেন।

>> জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন কার্ড বা যেকোনো ধরণের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখুন।

>> এ পথ পারি দেওয়ার পর্যাপ্ত মানসিক এবং শারীরিক প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন।

>> যাওয়ার আগে খুঁটিনাটি সব বিষয় কারো কাছ থেকে জেনে নিবেন।

>> ভালো গ্রিপের জুতা পরবেন।

>> প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং ফার্স্ট এইড সঙ্গে রাখবেন।

>> যাত্রাপথে জোঁকের দেখা পাবেন। তাই লবণ সঙ্গে রাখবেন।

>> পানি ও শুকনো খাবার সঙ্গে রাখবেন সবসময়।

>> স্থানীয়দের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন।

>> যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না।

লেখক: সিয়াম আহম্মেদ রাকিব
এইচআর ও এডমিন, খুঁজি বাংলাদেশ ট্রাভেলার্স

সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *