1. [email protected] : মো: সরোয়ার সরদার : মো: সরোয়ার সরদার
  2. [email protected] : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক
  3. [email protected] : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি
  4. [email protected] : Sadak Mostafa : Sadak Mostafa
  5. [email protected] : বিশেষ প্রতিনিধি : বিশেষ প্রতিনিধি
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা | ঢাকা আওয়ার
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৪:০০ পূর্বাহ্ন

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা

প্রতিবেদকের নাম
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৬৬ সময় দর্শন
ছবি সংগৃহীত

রেকর্ড পরিমাণ এবার রেকর্ড ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গে‌ছে। এ ছাড়া পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার। রাত সোয়া ১০টায় গণনা শে‌ষে এ হিসাব পাওয়া যায়। এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় মসজিদটির ৯টি দান সিন্দুক খোলার মধ্যদিয়ে টাকা গণনার কাজ শুরু করা হয়। দীর্ঘ সাড়ে ১৬ ঘণ্টার ম্যারাথন গণনায় পাগলা মসজিদ মাদ্রাসার ১৩৮ জন ছাত্র এবং রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে মোট ১৯৮ জন অংশ নেন। তাদের সহায়তা করছেন মসজিদ-মাদ্রাসার ৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এবার তিন মাস ২০ দিন পর মসজিদের দানসিন্দুক খোলা হয়। এর আগে সর্বশেষ গত ১৯শে আগস্ট এ মসজিদের দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল। পরে টাকা গণনা করে সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

এবারো মোট ২৩ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। তবে গণনা করে গতবারের চেয়ে এবার টাকা বেশি পাওয়া যায়। জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৭টায় ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম বার এর উপস্থিতিতে পর্যায়ক্রমে মসজিদের ৯টি দান সিন্দুকের সবগুলো খোলা হয়। দান সিন্দুক থেকে টাকা প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর টাকা গণনার জন্য বস্তাগুলো মসজিদের দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বস্তা থেকে টাকা মেঝেতে ঢেলে দেয়ার পর শুরু হয় টাকা গণনার কাজ। কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ এর তত্ত্বাবধানে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার শেখ জাবের আহমেদ, মো. মাহমুদুল হাসান, রওশন কবির, মোছা. আজিজা বেগম, জোবায়দা সুলতানা ও সুশান্ত সিংহ, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা, রূপালী ব্যংকের এজিএম মো. রফিকুল ইসলাম, পাগলা মসজিদ কমিটির সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা প্রমুখ টাকা গণনার কাজ তদারকি করেছেন। টাকা গণনার এই এলাহী কাণ্ড নিজ চোখে অবলোকন করতে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ মসজিদটিতে ছুটে গেছেন।

কথিত রয়েছে যে, এ মসজিদে দান করলে মনের বাসনা পূরণ হয়। মুশকিল আসানসহ মিলে রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি। এই বিশ্বাস থেকে স্থানীয়রা ছাড়াও দূর-দূরান্তের মানুষও পাগলা মসজিদে দান করতে ছুটে যান। তাদের বিপুল দানে মাত্র ৩ মাসেই পূর্ণ হয়ে যায় মসজিদের ৮টি দান সিন্দুকের সবক’টি। ফলে কিছুদিন আগে আরেকটি দান সিন্দুক বাড়ানো হয়। পাগলা মসজিদে মানুষ টাকাপয়সা, স্বর্ণালংকার, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, ফল-ফলাদি, কোরআন শরিফ ইত্যাদি দান করেন। এর মধ্যে টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার মসজিদের দানসিন্দুকগুলোতে জমা পড়ে। অন্যদিকে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, ফল-ফলাদি, কোরআন শরিফ ইত্যাদি নিলামঘরে জমা দিতে হয়। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দান সিন্দুকে নগদ টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার দান করা ছাড়াও মসজিদের নিলামঘরে নানা ধরনের জিনিসপত্র দান করেন।

অনেকের মানত থাকে, তারা সেসব দিয়ে যান। দিন যত যাচ্ছে পাগলা মসজিদের খ্যাতি ও জৌলুসের পাশাপাশি দানের পরিমাণ ততই যেন বাড়ছে। দান করতে এসে অনেকেই এখানে নামাজ আদায় করেন। বিশেষ করে জুমার দিনে মসজিদটিতে মুসল্লিদের ঢল নামে। এ সময় মূল মসজিদ ছাড়িয়ে সামনের ও আশপাশের খোলা জায়গা, সেতু ও সড়কেও নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে যান মুসল্লিরা। পাগলা মসজিদকে ঘিরে মানুষের এমন আবেগ-ভালোবাসা ছুঁয়ে যায় সকলের হৃদয়। ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খুলে পাওয়া টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়। এ ছাড়া স্বর্ণালংকার জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় নিলামে বিক্রি করা হয়। সাধারণত ৩ মাস পরপর মসজিদের দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়।
কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধি যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্যও। বর্তমানে ৩.৮৮ একর ভূমির উপর সম্প্রসারিত পাগলা মসজিদ এলাকায় মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। স্বভাবতই ঐতিহাসিক এই মসজিদকে নিয়ে জেলার ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলেই গর্ববোধ করেন।

সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *