1. [email protected] : মো: সরোয়ার সরদার : মো: সরোয়ার সরদার
  2. [email protected] : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক
  3. [email protected] : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি
  4. [email protected] : Sadak Mostafa : Sadak Mostafa
  5. [email protected] : বিশেষ প্রতিনিধি : বিশেষ প্রতিনিধি
ভাগ্য যাকে ঘর থেকে টেনে এনেছে রাস্তায় | ঢাকা আওয়ার
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৩:০২ পূর্বাহ্ন

ভাগ্য যাকে ঘর থেকে টেনে এনেছে রাস্তায়

প্রতিবেদকের নাম
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
  • ৪৩ সময় দর্শন
বামে আনসার আলী, ডানে তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে

কুড়িগ্রামের আনসার আলী এখন একজন ফুটপথের মানুষ। ঢাকা শহরের ফুটপথ তার বর্তমান ঠিকানা। পরিবার সহ খেয়ে, না খেয়ে কাটছে দিন। কিন্তু এক সময় তার ছিল ঘর-বাড়ি আর ১০ একরের বেশি কৃষি জমি।

কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে বসবাস করতেন আনসার আলী। এক ছেলে দুই মেয়ে সহ পাঁচ জনের সুখের সংসার ছিল তার। বাপ-দাদার ভিটে মাটি আকড়ে ধরে ইসলামপুর গ্রামে কেটেছে তার প্রায় ৬০ বছর। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদী, খাল-বিল, ফসলি মাঠ সবই তার আপন। কিন্তু কে জানতো ৬০টি বছরের চেনা নদী একদিন সব কেড়ে নেবে?

নদী ভাঙনে বসত ভিটা এমনকি কৃষি জমিও বিলিন হয়ে গেল আনসার আলীর। তিনি হয়ে গেলেন নিঃস্ব। পরিবারসহ হলেন গৃহহীন, শুরু হলো খোলা আকাশের নিচে অন্যের জায়গায় বসবাস। এরপরও গ্রাম ছেড়ে কোথাও যেতে চাননি তিনি। কিছুদিন এভাবে চলতে পারলেও শেষ পর্যন্ত পরিবেশ ও বাস্তবতার কাছে হার মানতে হয়েছে। খাবার নেই, পানি নেই, নেই কোনো উপার্জনের উপায়।

আনসার আলী ও তার মেঝ মেয়ে আকলিমা। রাজধানীর কলাবাগান ওভার ব্রীজের নিচে।

এদিকে মেঝো মেয়েটা আকলিমার (৪) চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। আকলিমা ৫ মাস বয়সে মটর সাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে বড় ধরণের ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাণে বাঁচলেও পিঠের হাড় ভেঙে যায়। সে সমায় প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ করেছেন তিনি। চিকিৎসা চলছিল কিন্তু টাকার জন্য চিকিৎসাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন আকলিমার শরীরে পঙ্গুত্ব দেখা দিয়েছে। শরীরের মাংস বাড়লেও হাড় বাড়ে না। পঙ্গু ভাতার কর্ডের জন্য এলাকার রহমত মেম্বারের কাছে গিয়েছিলেন আনাস আলী। মেম্বার ৩০০ টাকা ‘ঘুষ’ দাবি করে বসেন। আনাস আলীর ভাষায়, ‘নিজের জীবন বাঁচেনা ৩০০ টাকা ঘুষ দেই কোথা থেকে। আমার সামনে ঘুষ নিয়ে সবার কাজ করে দিছে কিন্তু আমার কাজ করে দেয় নাই’।

এক সময় গ্রামের মানুষের পরামর্শে পারি জামালেন ঢাকা শহরে। জায়গা হল ধানমন্ডি কলাবাগান ওভার ব্রীজের নীচে ফুটপথে। পরিবার সহ এখন তিনি সেখানেই থাকেন।

শহরে এসেও কোন কাজ খুঁজে না পেয়ে নিজ ইচ্ছাতেই কলাবাগান ক্লাবের দ্বিতীয় তলা ঝারু দেন রোজ। ক্লাবের সদস্যরা খুশি হয়ে মাঝে মাঝে কিছু টাকা দেন। আনসার আলী বলেন, ‘এ টাকায় তিন বাঁচ্চার মুখে খাওন দিতে পারিনে। তারপরও বাধ্য হয়ে করি। কারো কাছে হাত পাত্তে ভাল লাগেনা। তারপরও বউকে রাস্তায় রাস্তায় হাত পাত্তে হয়। সাথে যায় তার বড় মেয়ে আখিতারা (৭) ও ছোট ছেলে ফরিদুল(২)। মেঝো মেয়ে আকলিমা আমার কাছেই থাকে। আকলিমা ভাল ভাবে হাটতে চলতে পারে না। রংপুর এক ডাক্তারের দেখাইছি। ডাক্তার বলেছে ওর চিকিৎসার জন্য আরও প্রায় ৩০/৩৫ হাজার টাকা লাগবে।’

এই টাকা যোগাড় করা এখন অসম্ভব বলে জানান আমজাদ। এক সমায় তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি রাস্তায় থাকি না বাবা, ভাগ্য আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে।’

মো: সরোয়ার সরদার

সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *