1. [email protected] : মো: সরোয়ার সরদার : মো: সরোয়ার সরদার
  2. [email protected] : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক
  3. [email protected] : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি
  4. [email protected] : Sadak Mostafa : Sadak Mostafa
  5. [email protected] : বিশেষ প্রতিনিধি : বিশেষ প্রতিনিধি
বাংলাদেশে জোরালো হচ্ছে ‘ভারতীয় পণ্য বয়কট’ আন্দোলন | ঢাকা আওয়ার
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৭:৪৮ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে জোরালো হচ্ছে ‘ভারতীয় পণ্য বয়কট’ আন্দোলন

মো. সারোয়ার সরদার
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪
  • ৪২ সময় দর্শন

বাংলাদেশে ‘ভারতীয় পণ্য বয়কট’ আন্দোলন হচ্ছে ২০২৪ সালে শুরু হওয়া এক সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলন। আন্দোলনের উদ্দেশ্য হলো ভারতের বিরুদ্ধে জনমত গঠন ও ভারতীয় প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে মুক্তি দেওয়া। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্াচনের পর থেকেই এ আন্দোলনের আওয়াজ উঠতে থাকে। আন্দোলনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হলেও দ্রুত এর প্রভাব বাজারে পড়তে দেখা যাচ্ছে।

আন্দোলনের কারণ:
সীমান্ত হত্যা: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্াচনের পর জনগণের দীর্দিনের ক্ষোভ এই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রকাশ করতে শুরু করেছে।
নদীর পানি: তিস্তা, ফেনী, মহানন্দা, যমুনা ইত্যাদি নদীর পানি বণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিরোধ চলছে। এই বিরোধে ভারতের নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই ইন্ডিয়া আউট আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছেন।
অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ: বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপের অভিযোগও এই আন্দোলনের অন্যতম কারণ। বিশেষ করে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিগত কয়েকটি জাতীয় নির্াচনে ভারতের হস্তক্ষেপ আছে বলে অভিযোগ করা হয়।
অর্থনৈতিক প্রভাব: বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় পণ্যের একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার ও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিরুদ্ধেও অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এছাড়া, বাংলাদেশের চাকরির বাজারেও ভারতীয় প্রভাব দৃশ্যমাণ। জানা যায়, ভারতের তৃতীয় রেমিট্যান্সের উৎস বাংলাদেশ।

আন্দোলনের রূপ:
ভারতীয় পণ্য বর্জন: আন্দোলনকারীরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করার আহ্বান জানাচ্ছেন। শুরুতে আন্দোলনটি ইন্টারনেট ভিত্তিক মাধ্যমগুলোতে শুরু হলেও এখন মাঠ পর্ায়ে দেখা যাচ্ছে।
প্রতিবাদ সভা: বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সভা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ছোট বড় রাজনৈতিক দল এসব প্রতিবাদ সভার আয়োজন করছে। এছাড়া, সাধারণ মানুষও নিজ উদ্যেগে এ ধরণের প্রচারে অংশ নিচ্ছেন।
সামাজিক মাধ্যম: সামাজিক মাধ্যমে ভারতবিরোধী বার্তা ও পোস্ট ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে এ আন্দোলন আরও জোরালো হচ্ছে বলেই মনে করছে বিশ্লেষকরা।

আন্দোলনের প্রভাব:
রাজনৈতিক: আন্দোলনের প্রভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। দেশের প্রধান গণমাধ্যমগুলোতেও এ আন্দোলন নিয়ে কথা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ফলে ভারতের অর্থনীতিতে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়া দেশের বাজারে ভারতীয় পণ্য বিক্রির হার আগের তুলনায় অনেক কমেছে বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা।
সামাজিক: আন্দোলনের ফলে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এ বিষয়টি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে কথা বলছেন, দুই দেশের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্।

বাংলাদেশের বাজারে শত শত ভারতীয় পণ্য রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি জনপ্রিয় পণ্য হল-
খাদ্যপণ্য: চিনি, লবণ, চা, বিস্কুট, নুডুলস, চকোলেট, দুগ্ধজাত দ্রব্য, সুগন্ধি, মশলা।
পোশাক: শাড়ি, শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট, জুতা, গয়না, প্রসাধনী।
ইলেকট্রনিকস: মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, এসি, কম্পিউটার, ল্যাপটপ।
যানবাহন: মোটরসাইকেল, গাড়ি, বাস, ট্রাক।
ভারতীয় ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে: পতঞ্জলি, আমুল, প্যারাসুট, ডাবর, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, রিলায়েন্স, মারুতি ইত্যাদি।

ভারতীয় পণ্য আমদানির প্রভাব:
ভারতীয় পণ্য আমদানির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেশ কিছু ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। যেমন- ভারতীয় পণ্যের প্রাপ্যতা বাংলাদেশি ক্রেতাদের জন্য বিকল্প বৃদ্ধি করেছে। ভারতীয় পণ্যের প্রতিযোগিতা স্থানীয় পণ্যের দাম কমাতে সাহায্য করেছে।

আবার ভারতীয় পণ্য আমদানির নেতিবাচক প্রভাবও স্পষ্ট
স্থানীয় শিল্পের ক্ষতি: ভারতীয় পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতায় স্থানীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
টাকা বাইরে যাওয়া: ভারতীয় পণ্য আমদানির ফলে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে।
নির্ভরতা বৃদ্ধি: ভারতীয় পণ্যের ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতির ঝুঁকি বেড়েছে।

বাংলাদেশে ‘ভারতীয় পণ্য বয়কট’ আন্দোলনের তীব্রতা:
ভারতীয় পণ্য বয়কট আন্দোলন বাংলাদেশে কতটা তীব্র তা নির্ধারণ করা কঠিন। কারণ, এই আন্দোলনের কোনো কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নেই এবং এটি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিদের সমর্থনে পরিচালিত হচ্ছে। তবে আন্দোলনের তীব্রতা নির্ণয়ের কিছু সূচক ধরা যায়। যেমন-
সামাজিক মাধ্যমে ‘ইন্ডিয়া আউট’ এবং ‘বয়কটইন্ডিয়ানপ্রোডাক্টস’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে আন্দোলনকারীরা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিচ্ছেন। এই হ্যাশট্যাগগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় পণ্য বয়কটের দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।ভারতীয় পণ্যের বিক্রি কমেছে বলে বাজারের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে। আন্দোলনের প্রভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

ভবিষ্যৎ:
এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। অন্যদিকে, ভারত সরকার আন্দোলনটিকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশের ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগ এ আন্দোলনকে সমর্ন করে না।

সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *