1. [email protected] : মো: সরোয়ার সরদার : মো: সরোয়ার সরদার
  2. [email protected] : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক : ঢাকা আওয়ার ডেস্ক
  3. [email protected] : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি : আসিফ অনিক, খুবি প্রতিনিধি
  4. [email protected] : Sadak Mostafa : Sadak Mostafa
  5. [email protected] : বিশেষ প্রতিনিধি : বিশেষ প্রতিনিধি
আমি কারও বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলিনি | ঢাকা আওয়ার
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন

আমি কারও বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলিনি

প্রতিবেদকের নাম
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৪০ সময় দর্শন

প্রবাসী লেখিকা জান্নাতুন নাঈম প্রীতির আত্মজীবনীমূলক বই ‘জন্ম ও যোনির ইতিহাস’ প্রকাশিত হয়েছে এবারের অমর একুশে বইমেলায়। বইটি নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। ‘ব্যক্তি আক্রমণ’র অভিযোগ তুলে এরই মধ্যে বইমেলায় বইটি নিষিদ্ধ করেছে বাংলা একাডেমি। সেই বই ও নানা বিষয় নিয়ে ফ্রান্সের প্যারিস থেকে আমাদের সময় অনলাইন’র সঙ্গে কথা বলেছেন লেখিকা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মৌরী সিদ্দিকা।

প্রশ্ন: এবারের বইমেলায় আপনার নতুন বই ‘জন্ম ও যোনির ইতিহাস’ প্রকাশিত হয়েছে। বইটি সম্পর্কে জানতে চাই।

প্রীতি: ‘জন্ম ও যোনির ইতিহাস’ বইটি আমার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। এটা নিয়ে আসলে কিছু বলার নেই। বইটি সম্পর্কে জানতে হলে পড়তে হবে।

প্রশ্ন: বইমেলায় নিষিদ্ধ হয়েছে বইটি। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?

প্রীতি: বইটি নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত সত্য। দেশে, পিতৃতান্ত্রিক সমাজে সত্যের একটা লিমিট আছে। ধরুন, আপনার ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে, আপনার বাবার সঙ্গে মতানৈক্য হয়েছে। কিন্তু আপনাকে পরিবার নিয়ে বলতে বলা হলে আপনি ভাইবোনের কথা বলবেন। হয়তো সমস্যাগুলো খুব কাছের কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন। এই বইটা বন্ধুর মতো। প্রগতিশীলদের লেবেল, লিমিট আছে। সত্যিকার অর্থে প্রগতিশীলতার কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। ইউরোপে এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে নিয়ে যা খুশি বলা যায়। তাদের পছন্দ না হলে ইগনোর করবে। অথচ, দেশে কথা পছন্দ না হলেই মুখ চেপে ধরতে হবে, কীভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা যায় সেটা ভাবে।

প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, বইয়ে অনেকের নাম এনেছেন। তাদের কেউ মামলা করার কথা বলছেন। এ বিষয়ে কিছু বলেন।

প্রীতি: ইউরোপের আইন সম্পর্কে আমি জানি। আমি ইউরোপের আইনজীবীদের সঙ্গে কাজ করি। যদি এদিক-সেদিক হতো, তাহলে তারা আমার সঙ্গে কাজ করত না। আর চরিত্র মানে সেক্স করা নয়। আপনার এক্সপেরিয়েন্স আপনার চরিত্র নয়। আর আমি কারও বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলিনি। সত্যটা, আমার এক্সপেরিয়েন্স তুলে ধরেছি। প্রাইভেসির প্রশ্ন আসলে মিটু আন্দোলন হতো না।

প্রবাসী লেখিকা জান্নাতুন নাঈম প্রীতি ও তার বই ‘জন্ম ও যোনির ইতিহাস’
প্রশ্ন: দেশের একজন চলচ্চিত্র নির্মাতার ব্যক্তিগত গোপন বিষয় আপনি বইয়ে তুলে ধরেছেন। যদিও তিনি দাবি করেছেন, আপনাকে চেনেন না। এ সম্পর্কে কী বলবেন?

প্রীতি: আমরা বন্ধু ছিলাম। যদি উনি বলে থাকেন আমাকে চেনেন না, তবে মিথ্যা বলেছেন। তার সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল হাসান আজিজুল হকের (জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক) শেষকৃত্যে। সত্য বলেছি, পুরুষতন্ত্রে লাগছে। তার সঙ্গে এক্সপেরিয়েন্স মজার ছিল। ‘পাপ-পূণ্য’ মুভি ডাবিংয়ের সময় তার সঙ্গে আমার পরিচয়।

প্রশ্ন: বইটি লেখা ও প্রকাশ পাওয়ার কোনো হুমকি পাচ্ছেন?

প্রীতি: হুমকি দিয়ে লাভ নেই। আমি প্যারিসে। আর এর আগেও আমার নামে মামলা হয়েছে। আমি লুকিয়েও থেকেছি। আমার বইটা পড়লে পরিষ্কার হবেন। হেফাজত, শিক্ষা, ইরানে মাশা আমানি, সালমান রুশদিসহ এই বইয়ে অনেকের সম্বন্ধে লেখা আছে। এই বইয়ে বৈশ্বিক দিক তুলে ধরা হয়েছে। মহাভারতে যুদ্ধ হচ্ছে। দুই পাশে দুই পক্ষ। আমি হলাম তৃতীয় পক্ষ।

তারা লেখককে ভয় পান বলে হুমকি দিয়ে দাবিয়ে রাখতে চান। বই নিষিদ্ধ করেন। একপাশে প্রগতিশীল ভণ্ড, অন্যপাশে প্রতিক্রিয়াশীল। আমি এদের নিয়ে বলতে চাই না।

প্রশ্ন: অনেকেই বলছেন, আপনি আলোচনায় থাকার জন্য এভাবে অনেকের নাম ‘খারাপভাবে’ উপস্থাপন করেন। তাদের উত্তরে কী বলবেন?

প্রীতি: আমরা তো বুলিংয়ের মানেই বুঝি না। রাস্তায় পড়ে গেলে সেটাও একটা এক্সপেরিয়েন্স। আমি ভুক্তভোগী মেয়েদের থেকে ধর্ষণ, গণধর্ষণের ভয়ংকর ঘটনা শুনেছি। যদিও আমি এর সম্মুখীন হইনি। আমি শুধু আমার এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করেছি। আমি তো কারও বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলিনি। এখানে খারাপভাবে উপস্থাপনের কিছু নেই।

প্রশ্ন: আপনি বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনের অনেককে চেনেন। ব্যক্তিগতভাবে অনেকের সঙ্গেই মিশেছেন। বাংলাদেশের বিনোদন জগতে আপনার সবচেয়ে পছন্দের মানুষ কে?

প্রীতি: বিনোদন জগতের সবচেয়ে পছন্দের মানুষ আশফাক নিপুন। তার কাজ আমার ভালো লাগে। আরেকজন আছেন যুবরাজ শামীম। তার চলচ্চিত্র ‘আদিম’ মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্পেশাল জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদও পছন্দের। তার রেহনুমা মরিয়ম নূর দেখেছি। যদিও তার প্রথম চলচ্চিত্র আমার দেখা হয়নি।

প্রশ্ন: সামনে এ ধরনের লেখা কি আরও আসবে?

প্রীতি: অফ কোর্স। দিস ইজ দ্য বিগিনিং অব অল ট্যাবু। আমি সাহিত্য সম্পাদকদের কথা লিখেছি। তারা কতটা বদমাশ, পড়লে বুঝতে পারবেন। তাদের লেখা নিয়ে কল করে হ্যালো বললে বলেন, ‘কতটুকু হেলব’। এভাবে তারা কথা বলেন। এমন অনেকেই আছেন। তারা রাত-বিরাতে কল করেন। কল না ধরলে বলেন, ‘আমাকে ইগনোর করেন কেন?’ আমার মায়ের সঙ্গেও এটা শেয়ার করেছিলাম। আমাদের মেয়েরা কাজ পেয়ে ‘কাস্টিং কাউচ’ এর পথ ধরেই এগিয়ে যান। আমি তো শুধু আমার এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করেছি। (কাস্টিং কাউচ শব্দটার সঙ্গে কমবেশি সকলেই পরিচিত। বিশেষ করে বলিউডের সঙ্গে শব্দটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বলিউডে কাজ পেতে অনেক তারকাকেই এই শব্দটার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। কোনো পছন্দের চরিত্রে নিজেকে যুক্ত করতে কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনৈতিক প্রস্তাব পাওয়াকে ‘কাস্টিং কাউচ’ বলা হয়।)

পিতৃতান্ত্রিক সমাজ আইন তৈরি করে রেখেছে নিজেদের মতো করে। কতটুকু সত্যি বলতে পারবে মেয়েরা, তারও একটা মানদণ্ড আছে। নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে মেয়েরা কাজ করতে চায়। তখন তাদের এগুলো মেনে নিতে হয়। আমি বলছি না, … আমাকে এবিউজ করেছে। কিন্তু তার মেন্টালিটি এমনই। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমাদের কাউকে না কাউকে তো উদাহরণ তৈরি করতে হবে।

প্রশ্ন: আপনার ইউরোপের অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু বলবেন?

প্রীতি: আগে ইউরোপে সব সাদা চামড়া দিয়ে ভর্তি ছিল। আমি প্যারিসে এসে দেখি, দীপিকা পাড়ুকোনের ছবি পুরো প্যারিসজুড়ে। এখন সাদা, কালো, বাদামি সবাই বাস করছে। মানে পরিবর্তন হয়েছে। আমি আমার এক বন্ধুকে বলেছিলাম, ‘তোমাদের ক্যাপিটালিজম দেখছি ফেমিনিজম হয়ে গেছে।’

আমার বই দেশের ডান, বাম, জামায়াত, হেফাজত কারওই ভালো লাগবে না। তবে যারা চিন্তা-ভাবনা করতে পারে তাদের জন্য। তারা যেন ভাবতে পারে। দেশের অনেক মেয়ের সঙ্গে এই ঘটনাগুলো প্রতিনিয়ত ঘটছে। আমরা শুধু প্রকাশ করি না বা প্রকাশ করতে পারছি না। এই মানুষগুলোর মানসিকতা এমনই। অনেক মেয়ে আছেন বলতে চান, আবার সংসার ভেঙে যাবে, এ জন্য সাহস করে উঠতে পারেন না।

আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

প্রীতি: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *