শক্তিশালী ভূমিকম্প ও ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনে বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়া। এই দুটি দেশে রয়েছেন প্রচুর বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও প্রবাসী। ভূমিকম্পের পর তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে উদগ্রীব ছিলেন সবাই। এর মধ্যেই তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে ২১ বাংলাদেশিকে রাজধানী আঙ্কারায় সরিয়ে নেওয়ার কথা জানাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, যে ২১ বাংলাদেশিকে আঙ্কারায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া সিরিয়াতেও উদ্ধারকারী এবং চিকিৎসক দল পাঠানোর সরকারি পরিকল্পনার কথা জানান সেহেলী।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত গাজিয়ান্তে শহর থেকে গতকাল বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ১৯ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে আঙ্কারায় সরিয়ে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে খোঁজ নিয়ে পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে উল্লেখ করেন সেহেলী।
এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দুই বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছেন বলে খবর বেরিয়েছিল। বর্তমানে তারা আঙ্কারায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। সেহেলি বলেন, ‘সর্বশেষ পাওয়া তথ্যমতে, উদ্ধার বাংলাদেশি ছাত্র নূরে আলম ও গোলাম সাইদ রিংকু চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন’।
সেহেলী আরো বলেন, ‘বন্ধুপ্রতীম তুরস্কের ক্রান্তিকালীন ও দুর্যোগপূর্ণ সময়ে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট একটি চিকিৎসক ও উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। তারা আগামী এক সপ্তাহ তুরস্কে অবস্থান করে মানবিক সাহায্য দেবে এবং উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেবে। পাশাপাশি সিরিয়াতেও এ ধরনের দল পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে’।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রবাসীদের জন্য আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস দুটি হটলাইন চালু করেছে বলেও জানান মুখপাত্র।
আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসের দেওয়া তথ্য বলছে, তুরস্কে বর্তমানে পাঁচ থেকে সাত হাজার বাংলাদেশি বসবাস করছেন। তবে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশির মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মো. রফিকুল ইসলাম।
গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরপর দফায় দফায় আরও কয়েকটি ভূমিকম্প ও ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পনে কেঁপে ওঠে দেশ দুটি। এতে ধসে পড়ে হাজার হাজার ভবন। এসব ভবনের নিচে আটকা পড়েছে বহু মানুষ।
ইতোমধ্যে দেশ দুটিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ হাজার ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২ হাজার ৮৭৩ এবং সিরিয়ায় তিন হাজার ১৬২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply